প্রলম্বিত পথে মনুষ্য যাত্রা
নাজনীন সীমন
১৯৭১ থেকে ২০১২—সাল গণনার সহজ হিসেব। কিন্তু একটি জাতির জন্ম, বিকাশ, তার মধ্যে বেড়ে ওঠা ঘুণপোকা এবং সর্বোপরি, কালসাপ যা কিনা বিষাক্ত ছোবল মেরেছে বারবার, নীলবিষে ভরে তুলতে চেয়েছে সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশের প্রতি বর্গইঞ্চি, স্নায়ুতন্ত্রগুলো অবশ করে দিতে উদ্যত হয়েছে, তার ভয়াল ফণার নীচে রাখতে চেয়েছে ৫৬,০০০ বর্গমাইলের ভূ-খণ্ডকে এবং কিভাবে একটি বিশেষ শ্রেণীর লোকদের বিশেষ তত্ত্বাবধান, আপ্যায়ন, কন্যাজামাইয়ের আদরে এই কালসাপ তার হিসহিস শব্দে ভরে তুলেছে বাংলার আকাশ বাতাস, শিকার বানিয়ে দেশের কোমর পেঁচিয়ে ধরে গিলে ফেলার পাঁয়তারা করেছে সে হিসাব সহজ তো নয়ই বরং বেশ কঠিন-ই। অবশ্য এক অর্থে সহজ এ কারণে যে যার/যাদের দেশপ্রেম নেই, নেই মাতৃভূমির প্রতি আনুগত্য, তার/তাদের পক্ষে তো এমনটাই স্বাভাবিক এবং তারই প্রতিচ্ছবি দেখি আমরা দেশের এক শ্রেণীর মানুষের মধ্যে। দ্বিতীয়টিও প্রযোজ্য এজন্য যে যখন দেশের প্রতি ভালবাসার প্রকাশ করতে এসব মানুষেরা হাঁফানীর রোগীর মতো হাঁফাতে থাকেন, রঙিন ব্যানারে, পত্রিকার পাতায়, মাঠে ময়দানে ফলাও করে দেশদরদীর মার্কা সাঁটতে চান নিজেদের গায়ে অথচ ঐসব সর্পরূপীদের স্বজ্ঞানে স্বেচ্ছায় স্বর্ণমুকুট পরিয়ে নিশ্ছিদ্র প্রহরায় রাখতে সচেষ্ট হন, রাষ্ট্রের পতাকা তাদের গাড়িতে তুলে দিয়ে চরমতম সম্মান দেন, মহান সংসদে তাদের অপবিত্র, কলুষিত, বিষবাষ্প ছড়ানোর সুযোগ করে দেন, ধোঁকা দেন সাধারণ মানুষকে, তাদের সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্তে আসা, তাদের স্বরূপ উন্মোচন করা কঠিন বৈ কি!
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছে সন্দেহাতীত ভাবেই স্বাধীনতার আগে থেকে। ঘাতক রাজাকারেরা কখনোই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ চায়নি, আদতে পাকিস্তানের মতো পরাক্রমশালী সামরিক জান্তা যার সমর্থকেরও অভাব নেই, তার হাত থেকে মুক্তি সম্ভব এটা এরা চিন্তাও করতে পারেনি। তাই যতোটুকু হিংস্রতা দেখানো সম্ভব, অমানবিকতার সীমা যতোখানি অতিক্রম করলে আর মানুষের ছায়াও থাকে না, তারও ঢের বেশী ভয়ানক হয়ে রাজাকার আল বদর আল শামস বাহিনী পৈশাচিকতার তাণ্ডবে মেতে উঠেছিলো, প্রকম্পিত করেছিলো স্বাধীনতা কামী মানুষের দিন রাত্রি। মানবেতিহাসের জঘন্যতম নৃশংসতার প্রত্যক্ষ উদাহরণ সৃষ্টি করেছিলো এইসব নর ঘাতকেরা; শুধু মানুষ হত্যা করেই নয়, বরঞ্চ বর্বরতার যতো ধরন ছিলো এবং তার সাথে নতুন উপায় সংযোজন করে ন’ ন’টি মাস ধরে এরা গলা টিপে হত্যা করতে চেয়েছে বাঙালীর স্বাধীন হবার স্বপ্ন, চোরাবালিতে ডোবাতে চেয়েছে সংগ্রামী শক্তি।
যেহেতু তাদের স্বপ্ন সাধের পাকিস্তানী পতাকা আর তার উর্দু ভাষারই বরং বাংলা থেকে বিতাড়িত হওয়া নিশ্চিত হয়ে যায় ডিসেম্বরের দিকে, শেষ অস্ত্র হিসেবে তারা বেছে নেয় ডিসেম্বরের ১৪ তারিখ; ধরে ধরে বাড়ী বাড়ী গিয়ে যেসব মানুষগুলো দেশকে সফলভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতেন, সেইসব মেধা—শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, চিকিৎসক, প্রকৌশলীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। এটি স্বাধীনতার পূর্বলগ্নের শেষ রাজনীতি যার আরো একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ছিলো পরাজয়ের আগে ব্যাংকের টাকা পর্যন্ত পুড়িয়ে দেয়া যাতে করে স্বাধীন হলেও মেধাগত বা অর্থগত কোনোভাবেই দাঁড়াতে না পারে এ জাতি যার ফলশ্রুতিতে অদূর ভবিষ্যতে আবারো পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত হতে হয় বাংলাদেশকে, কিন্তু আরো মানবেতর ভাবে, আরো বেশী অধিকারক্ষুণ্ন হয়ে।
‘৭১এর ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত এই রাজনীতি এক রকম এবং একমুখী অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রত্যক্ষ বিরোধিতা হলেও বিজয় অর্জিত হবার পর থেকে তা বিভিন্ন দিকে মোড় নেয়। একশ্রেণী যখন তাদের পূর্ববর্তী চিন্তায় অটল থেকেছে, অন্য শ্রেণী তখন আবির্ভূত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশে আস্হার ভান দেখিয়ে যতো ধরনের সুযোগ সুবিধা সম্ভব, হাসিল এবং অন্তরালে দেশবিরোধী কাজের মাধ্যমে শত্রুমহলকে সাহায্য করতে। আবার অন্য এক শ্রেণীর মানুষ স্বাধীনতা এবং ধর্মকে গুলিয়ে তথা পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটিকে পাক পবিত্র এবং ইসলামের সমার্থক মনে করে এই রাষ্ট্রের প্রতি নতজানু হয়ে থাকে। আর এক ধরনের লোক আছে যারা বাংলাদেশের সংবিধানের চার স্তম্ভের একটিকে জুজুর মতো ভয় পায়—ধর্ম নিরপেক্ষতা শুনলেই মনে করে ধর্ম বিসর্জন দেয়ানোর জন্য রাষ্ট্রকর্তৃক ষড়যন্ত্রের অংশ এটি। শেষোক্ত দুই শ্রেণী এ কাজটি করে থাকে মূলত অজ্ঞতাবশতঃ যার ষোলআনা দায়ভার পড়ে বিশেষ কিছু রাজনৈতিক দলের উপর যারা অপপ্রচারের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে ধোঁকা দেয়ার জন্য এসব মনগড়া তত্ত্ব প্রচার করতে করতে একে একরকম সত্যে পরিণত করেছে ঐসব দুর্বলচিত্ত যুক্তিজ্ঞানহীন মানুষগুলোর কাছে। তবে সবচে’ বেশী রাজনীতিকরণ বোধকরি ঘটেছে ভারতকে ঘিরে; যেহেতু এটি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, ’৭১-এ আমাদের প্রত্যক্ষ সমর্থন যুগিয়েছে, সর্বপ্রথম স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি দিয়েছে, সর্বোপরি যেহেতু পরাজয়ের গ্লানি আজো না ভুলতে পেরেছে পাকিস্তান, না এদেশীয় বর্বরেরা, তাই ভারতকে তারা দেখে শত্রু হিসেবেই যার সূত্রপাত অবশ্য আরো আগে থেকেই— বিশাল এক উপমহাদেশ থাকার সময় থেকে।
উপরোল্লিখিত দ্বিতীয় ধারার রাজনীতিকরণের সুস্পষ্ট প্রকাশ ঘটে ’৭৫ পরবর্তী সময়ে যার প্রথম বহিঃপ্রকাশ একই সালের ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যার মধ্য দিয়ে। এর পর থেকেই পরিলক্ষিত হয় রাজাকারদের চরম উৎকর্ষ; দেশে বিদেশে বিশেষ সম্মানসহ পদোন্নতি দিয়ে রাজাকারদের পুনর্বাসন করা হয়, গর্তে লুকিয়ে থাকা ধেড়ে ইঁদুরগুলো লেজ নাচাতে নাচাতে বেরিয়ে আসে পরম নির্ভরতার আভাসে, নতুন কাটা খালে ধেই ধেই বেড়ে ওঠে কুমিরগুলো। আদতে এই প্রক্রিয়া অদ্যাবধি থামেনি, বরঞ্চ সময়ে আরো প্রবল হয়েছে। একটা সময়ে রাজাকারদের সাথে চুক্তি হতো রাতের আঁধারে, প্রকাশ্যে ঐসব তথাকথিত রাজনৈতিক নেতারা তাদের বিরোধিতা তো বটেই বিষেদাগারও করতেন কম বেশী, অথবা থাকতেন নিশ্চুপ; কিন্তু এখন আর রাখঢাকের কিছু নেই। এইসব মানবতাবিরোধীদের মুক্তির দাবীতে লাখো মানুষের জনতায় সগর্বে দাবী জানানো হয়, জাতিকে অবগত করা হয় এদের গুণকীর্তন অর্থাৎ কিনা এদের কাউকে বানানো হয় অধ্যাপক, ভাষা আন্দোলনের পুরোধা, মজলুম নেতা, দেশদরদী, আধ্যাত্নবাদের শিরোমণি সহ আরো বহু কিছু।
আর সুচিন্তিত রাজনৈতিক নীল নক্সার এই ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অন্যতম ফসল মানবতাবিরোধী ঐসব নেতাদের দল এখন ঘরে তুলতে শুরু করেছে। যখন থেকেই তারা খালে নির্বিঘ্ন বসবাস শুরু করেছে, ঠিক তখন থেকেই তাদের সুদূর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ধর্ম ব্যবসার অংশ হিসেবে হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে সন্তানদের নানা সুবিধা দিয়ে ক্রমশঃ মগজ ধোলাই করে নিজেদের কব্জির জোর বৃদ্ধি করেছে, গড়ে তুলেছে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী, রগ কাটা বাহিনী যাদের মুখ্যমন্ত্র, “বাঁচলে শহীদ, মরলে গাজী”, যারা নিয়তই ধর্মখোয়াগেল সিনড্রোমে ভোগে, মানুষের কোনো মূল্যই নেই তাদের কাছে, শুধু বিশেষ একটি ঐশ্বরিক গ্রন্হ ও তার প্রবক্তা ও অনুসারীরাই এদের কাছে গ্রহণীয়। একাধিকবার ক্ষমতাসীন বিশেষ এক রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছা, সাগ্রহ, সক্রিয় সহযোগিতায় দেশের সর্বস্তরে এদের প্রতিনিধি রয়েছে বর্ণচোরা হয়ে; প্রয়োজনানুযায়ী এরা ঠিকই চোরাগুপ্তা কাজ করে চলেছে যাতে সামগ্রিকভাবে দেশ অকার্যকর হয়ে পড়ে। এর উদাহরণ আমরা বারংবার দেখেছি, দেখছিও।
অ্যামিবার মতোই এদের যেনো ধ্বংস নেই, কাটা অংশ থেকে আবার জন্ম নেয় নতুন অ্যামিবা। অপকারী পরগাছার বাড় সব সময়ই বেশী; রাজাকারেরাও আমাদের স্বাধীন দেশে পরগাছা। মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগ তিতিক্ষাকে পুঁজি করে, ধর্মবিশ্বাসী মানুষদের অবলম্বন করে এরা বেড়ে উঠেছে, আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলছে আমাদের চারপাশ ক্রমান্বয়ে। বর্ণচোরা এইসব ভণ্ডদের কলা কৌশল ক্ষমতা অপরিমেয়। যখন তখন সারমেয়োর মতো ধারালো দাঁত বসিয়ে দিতে পারে জাতির ঘাড়ে, আঁচড়ে ক্ষত বিক্ষত করে তুলতে পারে দেশ মাতৃকাকে। য়ে কাজটি ’৭১-এ সম্পাদন করতে পারেনি, তা শেষ করার জন্য নানা রঙে নানা ঢঙে সর্বদিক দিয়ে প্রস্তুত এরা।
মানবতাবিরোধী অপশক্তিদের বিচার কার্য শুরু হয়েছে, নানা অনিশ্চয়তা, বাধা বিঘ্নের মধ্য দিয়ে কখনো শ্লথ, কখনো স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে চলেছে। খোদ যুদ্ধাপরাধী ও তাদের তৈরী দল থেকেও এখন জোর গলায় এই বিচারের প্রতিবাদ করছেন বর্তমান প্রধান বিরোধী দল। কারণটা সবার কাছেই পরিষ্কার হওয়ার সময় এটা। অথচ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ এখনও ধোঁয়াশাচ্ছ্ন এ ব্যাপারে যেহেতু যারা দেশবিরোধী হিসেবে ইতোমধ্যে পরিচিত, তাদের চেনা এবং বর্জন করা কঠিন কিছু নয় যদি ন্যূনতম মানবতা এবং বিবেকবোধ কারো থেকে থাকে; কিন্তু মুখোশের আড়ালে থাকা ঐসব অর্থলোভী, স্বার্থপর, হীনমন্য, নির্লজ্জ. সত্য বিবর্জিত, সুযোগ সন্ধানী অপশক্তিকে চেনা এবং তাদের পরিহার করাটা এতোটা সোজা নয়।
গোটা জাতি যখন আজ সোচ্চার হয়েছে এক দাবীতে, একত্রিত হয়েছে এক ছাতার নীচে, তখন বিচার হয়তো হবেই কুখ্যাত দাগী কিছু রাজাকারের, কিন্তু এদের নানাভাবে সহায়তা ও সমর্থনদানকারীদেরও কি বিচারের আওতায় আনা উচিৎ না? যেসব আইনজীবী তাদের সমর্থন দিচ্ছে (সম্মানসূচক ভাষা ইচ্ছেপূর্বক বর্জিত), রাজনৈতিক দল তাদের হয়ে কাজ করেছে ও করছে, তাদেরকেও যদি আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় না করানো হয়, তবে বিষবৃক্ষের শিকড় রয়েই যাবে এবং সুযোগমতো ডালপালা বিস্তৃত করে কালো ছায়ায় ঢেকে দেবে বাংলার ঘাস-মাটি-নদী।
দেশদ্রোহিতা কোনো দেশে কস্মিন কালেও প্রশ্রয় দেয়া হয়না, বরং এর ভয়াবহ শাস্তির জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ চোখের কোণ ঘুরিয়ে নজর করলেই আমরা দেখতে পারি। অথচ আমাদের এই দেশে দেশদ্রোহী শক্তিই বরং জোর গলায় কথা বলে, বিকৃত ইতিহাস নিয়ে বুক চিতিয়ে হাঁটে, নতুন প্রজন্মদের বিপথগামী করে খোলা বানে ভাসিয়ে নিয়ে যায় মিথ্যের কাণ্ডারী হয়ে। ভাইরাস যেমন খালি চোখে দেখা যায়না, এই মুখোশধারী শক্তির কর্মপ্রণালীও তেমনি অদৃশ্য। আবার ভাইরাসের যেমন জীবন্ত শরীরের কোষ প্রয়োজন হয় সংখ্যাবৃদ্ধির জন্য, পুরোনো ঘাতকরাও ঠিক তেমনি বেড়ে উঠতে আশ্রয় করেছে বিপথগামী কিছু রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে গঠিত এক দলকে। অসংখ্য মিল থাকা সত্ত্বেও ভইরাস ও রাজাকারদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অমিল হোল অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রথমটি থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য প্রতিরোধ ব্যবস্হা তথা সচেতনতার উপর নির্ভর করতে হয় যেহেতু সব ভাইরাসের বিপরীতে প্রতিষেধক এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি এখন পর্যন্ত; কিন্তু যুদ্ধাপরাধী ও তাদের দোসরদের বেলায় উভয় ব্যবস্হাই গ্রহণ করা সম্ভব—যথাযুক্ত শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে এদের শাস্তির ব্যবস্হার মাধ্যমে বাংলার মাটি থেকে এদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়া এবং ছদ্মবেশীদের মিষ্টি কথায় কান না দিয়ে সত্য মিথ্যা বিচার করে, সঠিক ইতিহাস জেনে যুক্তির সাথে বিবেচনাপূর্বক এসব হঠকারীদের পরিত্যাগ এবং তাদেরও বিচার ব্যবস্হা নিশ্চিত করে যাতে এদের ডিম্বক ও বীর্যে আর কোনো ভ্রুণ গঠিত হতে না পারে, অবশ্যই রাজাকারমুক্ত সত্যিকার স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নকে আমরা বাস্তবে পরিণত করতে পারি।
একজন সুনাগরিক হিসেবে, সচেতন, বুদ্ধিদীপ্ত, মানবিক বোধসম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই কর্তব্য যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সমর্থন দাতাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো, তাদের না বলা। আমরা কি পালন করছি আমাদের দায়িত্ব? ১৯৭১ থেকে ২০১২—সুদীর্ঘ সময়, আর কতো মাস, বছর পার হলে আমরা পূর্বপুরুষের রক্তের ঋণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবো? কবে মানুষের মতো মানুষ হবো আমরা?
এবার আমাদের বলতেই হবে:
“ঘাতক তুমি সরে দাঁড়াও, এবার আমি
লাশ নেবো না।
নইতো আমি মুদ্দোফরাস। জীবন থেকে
সোনার মেডেল,
শিউলি-ফোটা সকাল নেবো।
ঘাতক তুমি বাদ সেধো না, এবার আমি
গোলাপ নেবো।” (শামসুর রাহমান)
No comments:
Post a Comment