Friday, April 13, 2012

মানবতাবাদীতার ফেরিওয়ালা

                                              
      পৃথিবীতে বরাবরই দুর্বল গোষ্ঠী শিকার হয় শক্তিশালীর, টিকে থাকে শক্তিমানের আধিপত্য। ডারউইন না বুঝেও বা সচেতন না হয়েও জীব জগতের প্রত্যেকে এই তত্ত্বকে নিয়ত প্রমাণ করে চলে। বোঝার মধ্যে আছে মানব প্রজাতি; কিন্তু বই পড়ে, তা নিয়ে ভেবে চিন্তে তো আর আমরা জীবন যাপন করিনা; তাই তাদের ক্ষেত্রেওে এই জ্ঞান থাকে পুঁথিগত বিদ্যার ভেতরে। বহু বহু আগে একসময় নারী পুরুষের তুলনায় দুর্বল এমন কোনো চিন্তা ছিলো না মানুষের। দলবদ্ধ ভাবে সবাই শিকার করেছে, খেয়েছে, ঘুরেছে, সঙ্গমের মাধ্যমে সন্তান উৎপাদন করেছে। এই দলবদ্ধতা যতোই সংঘবদ্ধ রূপ নিয়েছে, ততোই নিয়ম কানুন তৈরী হয়েছে। আবার শুরুতে ধর্মের কোনো নাম গন্ধ ছিলো না; মানুষ নিজস্ব প্রয়োজনে বা স্বার্থসিদ্ধির কারণে আরম্ভ করেছে ধর্মীয় আচার নিষেধ। সৃষ্টি হয়েছে অদৃশ্য এক শক্তির এবং তার প্রচারক কিছু মহান অবতারের। ভয় ভীতির মাধ্যমে তারা অপেক্ষাকৃত কম চিন্তাশীল বা সাধারণ মানুষের মধ্যে বসন্ত রোগের মতো ছড়িয়েছে অলৌকিককে শন্কা করার বীজ। এই কাজ করতে গিয়ে এইসব ধর্মীয় পুরুষেরা তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখেছে দুই শ্রেণীর মানুষকে----মুক্তমনা, যুক্তিবাদী, সচেতন ও উৎসুক মানুষ এবং নারীকেগ্যালিলিও, ব্রুনো থেকে শুরু করে আহমদ শরীফ, হুমায়ুন আজাদের মতো মানুষেরা প্রথমোক্ত শ্রেণীর অর্ন্তভূক্ত যাদের প্রশ্ন থাকার কারণে অপদস্হ তো বটেই একমাত্র সম্বল জীবনও হুমকির মধ্যে পড়েছে। আর নারীকে দেখানো হয়েছে দুর্বল গোষ্ঠী হিসেবে যার রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে পুরুষদের। এবং ধর্মের শৃঙ্খলের মাধ্যমে এদের যাবতীয় স্বাধীনতা হরণ করে মগজ ধোলাইয়ের মাধ্যমে বশবর্তী গৃহপালিত জন্তু হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। যুগের বিবর্তনে মেরি ওলস্টোনক্র্যাফট, স্যিমোন দ্য বোভোয়ার, ব্রন্টে, মিল, এ্যাঙ্গেলস, ব্রাউনমিলার, মিলেট, ডিকিনসন, উলফ, এ্যান্জেলো, মরিসন, ওয়াকার, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, সফিয়া খাতুন, লীলা রায়, আমতুস সালাম, মনোরমা বসু, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন রায়, এম. এন রায়, সরলা দেবী, নজরুল, সুফিয়া কামাল, হেনা দাস, জাহানারা ইমাম, হুমায়ুন আজাদ সহ অসংখ্য মানুষ নিজ নিজ ক্ষেত্রে নিজস্ব ভাবে এই শিকল থেকে বের হবার প্রেরণা যুগিয়েছেন, বুঝতে শিখিয়েছেন এটি অন্যায় ও অমানবিক, প্রতিবাদ করার চিন্তাসূত্র ধরিয়ে দিয়েছেন, নিজেরা প্রতিবাদ করেছেন।

    সময় বদলেছে অনেক। এখন আর আগের মতো প্রতিদিন যৌতুকের জন্য নির্যাতনের খবর আসে না, এসিড দগ্ধের সংখ্যা বেড়ে চলে না, ধর্ষণের সংখ্যাও আনুপাতিক হারে কমেছে অনেক। আইনের প্রয়োগই এর অন্যতম কারণআবার অন্যদিক চিন্তা করলে দেখা যায়, নতুন ধরনের নির্যাতন পদ্ধতি বেরিয়েছে। কিছু নাম হোলো মানসিক চাপ সৃষ্টি করা, ভাষাগত অত্যাচার, ইভটিজিং, ব্ল্যাকমেইলিং, ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও চিত্র প্রকাশ, ফেসবুক সন্ত্রাস প্রভৃতি ----এর বেশ কয়েকটি আবার যুগ যুগ ধরে চলে আসছেশারীরিক সন্ত্রাসের তীব্রতা কমেছে শ্রেণী বিশেষে, কিন্তু শাসন, ধরে রাখার প্রবণতা, শৃঙ্খলিত করার চেষ্টা কমেনি, বরং নারীদের প্রগতির সাথে সাথে নতুন এক উপসর্গের উদ্ভব ঘটেছে---ভয় ও হিংসার সংমিশ্রণে একটা কিছু যার নাম এখনো নির্দিষ্ট করে প্রকাশিত হয়নি, তবে প্রকাশ অত্যন্ত ভয়ন্কর। সফল, শিক্ষিত নারীদের নিয়ে তাদের পথ চলার পুরুষ সঙ্গীরা এক রকম বিপাকে পড়েছেন---নারীর এইসব গুণাবলী তাদের যেমন পছন্দ সমাজে খাপ খাইয়ে চলার জন্য, ঠিক তেমনি এগুলো তাদের এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখে কখন না জানি নারী সঙ্গী/স্ত্রী ছেড়ে চলে যায়। তারও চেয়ে বড় ভয় ও লজ্জা যদি নারীটি পুরুষটির চেয়ে কোনো অংশে বেশী যোগ্যতাসম্পন্ন হয়, অনবরত এক ধরনের হীনমন্যতা দহন করতে থাকে এইসব মানুষদের এবং এই অর্ন্তদ্বন্দ্বের বর্হিপ্রকাশ ভীষণ আকার ধারণ করে ক্ষেত্র বিশেষে।
    এরকমই এক ঘটনার মুখোমুখি আমরা হলাম সাম্প্রতিক সময়ে: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক মারাত্নক নির্যাতনের শিকার হলেন স্বামী কর্তৃক। কারণ তাঁর সাফল্য নাকি অপর পক্ষকে ঈর্ষান্বিত করে তুলেছিলো। ঈর্ষান্বিত, চিন্তিত, উদ্বিগ্ন, ভীত হওয়াটাইতো স্বাভাবিক, কারণ তিনি ‘নারী’র পক্ষে যা ‘শোভন’ নয়, তাই-ই করছিলেন। নারী সম্পর্কে আমাদের সনাতন বোধ ও বিশ্বাস অনেকটা অপরিবর্তনীয়ই থেকে যায় শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে। রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস করতেন, “প্রকৃতিই রমণীকে বিশেষ কার্য্যভার ও তদনুরূপ প্রবৃত্তি দিয়া গৃহবাসিনী করিয়াছেন—পুরুষের সার্ব্বভৌমিক স্বার্থপরতা ও উৎপীড়ন নহে—অতএব বাহিরের কর্ম দিলে তিনি সুখীও হইবেন না, সফলও হইবেন না” (উদ্ধৃত, নারী, ১১৯), এবং নারীমুক্তিবাদী কৃষ্ঞভাবিনী দাসের নারীমুক্তি বিষয়ে বিতর্কে এভাবেই জোরালো মন্তব্য প্রকাশ করেন তিনি। তাই যখনই একজন নারী সফল বা সঙ্গী পুরুষটি থেকে অধিকমাত্রায় সফল হন, এই সময়েও এমনকি একজন উচ্চশিক্ষিত পুরুষও শন্কা বোধ করেন, হীনমন্যতায় ভোগেন বিবিধ কারণে যার কিছু সামাজিক চাপে, কিছু ব্যক্তিগত সঙ্কীর্ণতার কারণে। রবীন্দ্রনাথকে এই প্রসঙ্গে আবারও উল্লেখ করতেই হয়। ‘শেষের কবিতায়’ তিনি নিবারণ চক্রবর্তীর মুখে তাঁর নিজস্ব ভাবনার প্রতিধ্বনি তোলেন এই বলে যে, “পুরুষ আধিপত্য ছেড়ে দিলে নারী আধিপত্য শুরু করবে। দুর্বলের আধিপত্য ভয়ন্কর”। আমাদের সমাজের একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বোধকরি এখনো এই তত্ত্বেই বিশ্বাস রাখেন যার প্রতিচ্ছবি নিয়ত আমরা চারপাশে দেখতে পাই।

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনা প্রসঙ্গে স্বামী ভদ্রলোকের দাবী রুমানা মন্জুরকে সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছিলো, তিনি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন, এই কারণেই আবারো কানাডা যেতে চাইছিলেন। বলা বাহুল্য সবই সম্ভবএবং মনে রাখা আবশ্যক যে নারীকে ঘায়েল করার জন্য সবচে’ মোক্ষম অস্ত্র হোলো তার চরিত্র নিয়ে কথা বলা। চরিত্রের সংজ্ঞায় অবশ্য তেমন কিছু থাকে না, এমনকি সত্যবাদীতাও স্হান পায়না এই তালিকাতে। বরং এখানে একক আধিপত্য করে একজন পুরুষের সঙ্গে নারীটির শারীরিক বা মানসিক সম্পর্ক----বিয়ের আগে বা পরে নির্বিশেষে। এমনকি নারীটি যদি বলাৎকারের শিকারও হন, তাতেও সাধারণত নারীকেই দোষারোপ করা হয় তার চরিত্রের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে। কারণ নষ্ট মেয়ে না হলে কেনোই বা একজন তার দিকে নজর দিতে যাবে। পুরুষ যাতে তার পথ ভুল না করে, তার যেনো কোনো রকম বদ স্পৃহা জেগে না ওঠে, কামনার আগুনে যাতে অঙ্গার না হয় সেজন্য ধর্মীয় গ্রন্হাবলীতে, বিশেষত কোরানে নারীদের আপাদমস্তক ঢেকে রাখার উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে যাতে তার সৌন্দর্য আস্বাদনের সাধ কাউকে দহন করে বিপথে চালিত না করে। তো আমরাও নারী পুরুষ নির্বিশেষে এই বাতলে দেয়া পথে চলি অধিকাংশ মানুষ। এমনকি দেখা যায় কোনো মেয়েকে উত্যক্ত করছে একদল বা একটি বখাটে ছেলে; দোষ কার? অবশ্যই স্ত্রী লিঙ্গধারী মানুষটির। ঠিক তেমনিভাবে এই ঘটনাতেও দাঁড়িয়ে গেলো পক্ষ বিপক্ষ যদিও পক্ষের মানুষের সংখ্যাই বেশী। এর অনেকগুলো সঙ্গত কারণের ভিতর একটি হোলো রুমানা মন্জুরের আর্থ সামাজিক অবস্হান, তাঁর পরিবারের সামর্থ্য মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার। এই যুক্তি অহেতুক নয় এই কারণে যে প্রতিদিন আমাদের সমাজে একাধিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে থাকে যার বেশীর ভাগ আমাদের গোচরীভূতই হয়না। যেগুলো হয়, তার মধ্যেও আবার অধিকাংশ ঘটনা এতোটা প্রচার পায়না বা সাড়া জাগায় না; বেশীর ভাগ ক্ষেত্র্রে অপরাধী ধরা তো পড়েই না, অত্যাচারিতকে অপরাধী মন নিয়ে ঘুরতে হয়।

    ঠিক যে সময়ে রুমানার এই ঘটনা আমাদের মর্মন্তুদ ভাবে আলোড়িত করেছে, সেই সময়েই ঘটে যাওয়া আরো হয়তো বেশ অনেকগুলো ঘটনা আমাদের কান পর্যন্ত এসে পৌঁছেনি। কিন্তু যেটির কথা আমরা জেনেছি সেটি হোলো প্রতিবেশী কর্তৃক নোয়াখালির এক গৃহবধূর ধর্ষিত হবার ঘটনা। শুধু শারীরিক নির্যাতনই নয়, ধর্ষক পরে আবার এসিড ঢেলে পৃরোটা শরীর পুড়িয়ে দিয়েছে এই নারীটির। টিভির পর্দায় আমরা অনেকেই হয়তো দেখে থাকবো সমস্ত শরীরে সাদা ব্যান্ডেজ বাঁধা জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এই মানুষটির গোঙানি। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমার দেখা বা জানা মতে একজন মানুষও এই ব্যাপারে কোনো রা করেননি। তা না করতেই পারেনপ্রত্যেকেরই স্বাধীন আচরণের শতভাগ অধিকার রয়েছে। তাছাড়া এইসব অমানবিক ঘটনা যখন আমাদের নিত্যসঙ্গী, তখন কতোই বা অনুভূতি প্রকাশ করা যায়!প্রশ্ন জাগে তখনই যখন প্রথমোক্ত ঘটনায় প্রতিবাদকারীদের কেউ কেউ মুখে ফেনা তুলে ফেলেন মানবতা লঙ্ঘিত হয়েছে, আর এক চুলও এসব অত্যাচার সহ্য করবেন না বলে। মানবতার কি শ্রেণী বিভেদ থাকে না থাকা উচিৎ?
    কাউকে কাউকে প্রতিশ্রুত হতে শুনেছি মিলে গেলে নিজের চোখ পর্যন্ত দান করে দেবার
কয়েকজন পুরুষকে শুনলাম রুমানার স্বামীর অণ্ডকোষ কেটে রাস্তায় ঝুলিয়ে দেবার তোড়জোড় করতে, কেউ কেউ আবার কাককে দিয়ে তা খাওয়ানোর সদিচ্ছাও ব্যক্ত করেছেন। কয়েকজন নারীবাদী নারীকে দেখলাম রুমানার স্বামীর চোখও একইভাবে উপড়ে ফেলার দৃঢ়তা ব্যক্ত করতে। কয়েকজন তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহে যথেষ্ট তৎপরতা দেখালেন। একজন তাঁর কোনো এক সাংবাদিক বন্ধুকে মিনতি করে বললেন তিনি যেনো এটি নিয়ে লেখেন জোরালো ভাবে, কেউ কেউ প্রশ্ন তুললেন জোর গলায় দেশের সরকারী প্রধান এবং বিরোধী দলীয় প্রধান নারী হওয়া সত্ত্বেও এমন বর্বরোচিত ঘটনা কেমন করে ঘটে যেনো এই প্রথম আমরা নারী নেতৃত্ব দেখছি আর এই প্রথম এ ধরনের নারকীয় ঘটনা ঘটলো। সবচে’ অবাক হলাম যখন আমাদের বর্তমান সরকারী দলে থাকা নারী মন্ত্রী, সংসদ সদস্য রাস্তায় নেমে এলেন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে। এর বিচার যে হবেই তা তারা নিশ্চিত করতে চাইলেন রাস্তার খররৌদ্রে দাঁড়িয়েই। বিরোধী দলকে অন্ততঃ এই একটি ব্যাপারে আমি ধন্যবাদ দেয়া বাঞ্চনীয় মনে করি যে তারাও রাস্তায় নেমে হঠাৎ করে মানব দরদী হবার প্রয়াস নেননি। অবশ্য আমি জানিনা রুমানা মন্জুর লাল সাদা না নীল দল সমর্থিত এবং এটিও কোনো ভূমিকা রেখে থাকতে পারে কিনা। আমাদের আনন্দে থৈ থৈ করার যথেষ্ট কারণ আছে এই জন্য যে মাননীয় সংসদ সদস্যদের একজন ফুটনোটের মতো একটু করে বললেন যে কোনো নারী নির্যাতনের শিকার হলে সরকার এই ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্হা গ্রহণ করবে। শ্রেণী বৈষম্যের কি নির্মম উদাহরণ!

    আমরা সবাই কম বেশী অবগত যে মিডিয়ার কাজই হোল বেছে নেয়া কোন ঘটনাটি প্রকাশ করলে তাদের পাঠক/দর্শক হুমড়ি খেয়ে পড়বে তাদের উপর। আবার আমাদের উপমহাদেশে এবং বিশেষত আমাদের মতো দারিদ্রসংকুল দেশে আইন রক্ষাকারী বাহিনীও পক্ষপাতদুষ্ট। এটি মোটামুটি প্রকাশিত গোপন কথা। কিন্তু এখন আর প্রচার মাধ্যমগুলো বা পুলিশ বাহিনী কেবল নয়, বরং সাধারণ মানুষেরাও ঘটনা বেছে তাদের প্রতিক্রিয়া দেখান; তাই বোধহয় একই ধরনের ঘটনায় কেউ পান বহুল প্রচার ও যথাযোগ্য বিচার, আর অন্য কেউ হয়তো কারো দৃষ্টিই আকর্ষণ করতে পারেন না। সাম্প্রতিক আরো একটি ঘটনা এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে। ভিকারুন্নেসা নুন স্কুলের এক ছাত্রীর শিক্ষক কর্তৃক নির্যাতিত হওয়ার পাশবিক ঘটনায় আমরা কম বেশী সবাই আন্দোলিত হয়েছি, সবাই এর বিচার চাইছি, শিক্ষক পরিমলকে হাতের কাছে না পেয়ে মুখে তাকে ছিন্নভিন্ন করছি। সবই সঙ্গত, মানুষের মতোই আচরণ করছি আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে। কিন্তু খটকা লাগে তখন যখন গ্রামের কোনো এক কিশোরী কন্যাকে বা প্রাথমিক শ্রেণীর এক শিশু ছাত্রীকে উপর্যুপরি ধর্ষণের পর পাটক্ষেতে মৃত বা অর্ধমৃত অবস্হায় ফেলে রাখার ঘটনা আমাদের ততোটা শিহরিত করে না, যেমন আমরা মানবিক হয়ে উঠি না নিম্নশ্রেণীর কোনো নারীর অত্যাচারিত হওয়ার ঘটনা শুনে যেনো এমনই তো হবার কথা অথবা এসব তো হর হামেশাই ঘটছে, কতো আর নজর দেয়া যায় বাপু!

                সবচে’ মজার অথচ দুঃখজনক ব্যাপার হোল মাসখানেক না যেতেই রুমানা মন্জুরকে নিয়ে অতি উৎসাহীদের সব মাতামাতি থেমে গিয়েছে। সবাই পরবর্তী এ জাতীয় ঘটনার অপেক্ষা করছেন বোধহয় এবং মধ্যবর্তীকালীন সময়ে ‘সাধারণ’ কিছু নিয়ে ব্যস্ত আছেন সবাই। যারা চক্ষুদান করতে চেয়েছেন, কানাডার হাসপাতালে চোখ প্রতি দুটো করে অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকেরা আশার বাণী না শোনাতে পারার পরও এঁরা এখন নীরব ভূমিকা পালন করছেন। কারণ অতি আবেগ খুব সাময়িক। পুত্রশোকও নাকি মাসের ব্যবধানে খানিকটা হাল্কা হয়, আর এটিতো অপরিচিত একজন মানুষ।

                    শুধু তাই-ই নয়, আমরা যে কোনো বিষয়ের হয় এপার, নয় ওপার দেখি মধ্যবর্তী অংশটুকু পুরোপুরি অস্বীকার করে। স্রোত যেদিকে যায়, নাক চোখ, বুদ্ধি সব বন্ধ করে আমরা সে দিকেই ভেড়ার পালের মতো হাঁটি। উপরোক্ত ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে এই সত্য আবারো জ্বলজ্বল করে উঠলো। কোনো এক অনুষ্ঠানে একজন বসে বসে পত্র্রিকা মুখস্ত করছিলেন আর সবাইকে ডেকে ডেকে দেখাচ্ছিলেন রুমানার ছবিটি। পাশে বসা একজন আমাকে জিজ্ঞেস করলেন ঘটনার বিবরণ। বর্ণনাপ্রসঙ্গে যেই রুমানার স্বামীকৃত মন্তব্যের কথা বললাম, আমাকে তো দু’ চারজন পারলে লবণ তেল মরিচ ছাড়াই চিবিয়ে ফেলেন! আমি যতোই বলি এটি আমার ভাবনা নয়, কেবল ঘটনার বিবরণে প্রাসঙ্গিক বলে উল্লেখ করছি, ততোই নখে দাঁতে ছিন্নভিন্ন করতে চাইলেন যেনো আমি নিজের দু’আঙ্গুল দিয়ে উপড়ে তুলেছি রুমানার নয়, ঐ ব্যক্তির চোখ দুটো। খুব শানানো গলায় বারংবার একজন বললেন মেয়েদের কিছু হলে মেয়েরাই সে ঘটনাকে সব সময় অন্য খাতে প্রবাহিত করতে চায়, ভূক্তভোগী মেয়েটিকে চরিত্র্রের দোষ দেয়, না থাকলে খুঁজতে সচেষ্ট হয়। পুরো ঘটনা শোনার কোনো উৎসাহ বা আগ্রহ তাঁর দৃশ্যমান হয়নি। কথা শুনে কেবলি মনে হচ্ছিলো পুরুষমাত্রই নারীকে অত্যাচার করার জন্য মুখিয়ে আছে এবং নারীরা কস্মিনকালেও কিছু করেন না। এই অন্ধত্ব আমাদের অশিক্ষারই পরিচায়ক বৈকি। আমাদের নিজেদের বিবেক বুদ্ধি ও বিবেচনা দিয়ে আমরা ঠিক ততোটা কাজ করিনা যতোটা না অন্যের দেখানো পথে চলি। চিলের কান নেয়ার গল্প বারংবার প্রতিফলিত হয় আমাদের কাজকর্মে। আবার একজনকে দেখা গেলো সবাই যেহেতু রুমানার হয়ে কথা বলছে তাই ইচ্ছাকৃত ভাবেই ঘোষণা দিয়ে হাসানের পক্ষ নিতে কারণ তিনি সব সময় স্রোতের বিপক্ষে থাকেন। কি বিবেচনা বোধ!কি ব্যতিক্রমী ভাবনা! অথচ এদের কাউকে একথা বলতে শোনা গেলো না যে ঘটনা যাই হোক না কেনো একজন মানুষের সাথে কোনো অজুহাতেই এই ধরনের বর্বর আচরণ করা যায় না, মানুষ হবার অন্যতম শর্ত বিবেকবোধ এবং এই ধরনের আচরণ এই শর্তকে পুরোপুরি ক্ষুণ্ন করে।

                    মানুষ হয়ে আমরা যেমন পারিনা একজন নারীর গায়ে এসিড ছুঁড়ে মারতে, ঠিক তেমনি পারিনা একজন পুরুষের কণ্ঠনালী বা অণ্ডকোষ ভাড়াটে গুণ্ডা দিয়ে কেটে নিতে। অথচ এর সবই ঘটছে আমাদের চারপাশেই কেননা আমরা মনুষত্বের পথ পরিক্রমা থেকে বিচ্যুত হয়েছি। অবশ্য এখানেও প্রশ্ন আছে, আমরা কি আদৌ কোনোদিন মনুষত্বকে লালন করেছি সেভাবে? এ ধরনের পাশবিকতা কি আগে ঘটেনি? জাত-ধর্ম-লিঙ্গ নির্বিশেষে আমরা এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হতে দেখেছি মানুষকে সব সময়ই। অন্ধকার যুগে যেমন, তার পরেও তেমনি এবং এখন এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও আমরা একই ধরনের অসভ্য আচরণ করছি।শোষক ও শোষিতের সম্পর্ক চিরদিনের। নীল চাষ করতে যখন বাধ্য করা হয়েছিলো ভারতীয় কৃষকদের তাদের আঙ্গুল কেটে, হত্যা করে, নীলকুঠি যখন অত্যাচারের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছিলো, সম্রাট শাহজাহান যখন তাঁর প্রিয়তমার প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন তাজমহল নির্মাণে নিয়োজিত সব শ্রমিকদের (সহস্রাধিক)মাটির নীচে আটকে রেখে মেরেছিলেন যাতে করে এর দ্বিতীয়টি এরা বানাতে না পারেন, জাপানে যখন পারমাণবিক বোমা ফেলেছিলো মার্কিন বাহিনী, জার্মানীতে যখন কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে হিটলার ও তার বাহিনী মানুষ মারার নেশায় মেতে উঠেছিলো, একাত্তরে যখন নারী পুরুষ শিশু বৃদ্ধ নির্বিশেষে সবাইকে পাকবাহিনী তাদের বাংলাদেশের দোসরদের সাহায্যে মেরে কেটে পুড়িয়ে শেষ করে দিয়েছিলো এবং এমন হাজার হাজার ঘটনার উল্লেখ করা যাবে, তখনও বিবেকের চোখে ঠুলি পরিয়ে এইসব তথাকথিত মানুষেরা হয়ে উঠেছিলো অত্যাচারের প্রতীক, মানবতা হয়েছিলো ভূলুণ্ঠিত, মানবিক বোধ হয়েছিলো পদদলিত। এবং দুঃখের কথা এই যে এ জাতীয় ঘটনার শেষ হবে না, চলতেই থাকবে মানুষ এবং তার সভ্যতা যতোদিন থাকবে। তাইতো একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও গুয়ান্টামো বে-র খবর শুনে আমরা শিহরিত হই আপাদমস্তক, এরশাদ শিকদারের বরফকল আমাদের আমূল কাঁপায়, একুশে আগষ্ট, পিলখানা হত্যাকাণ্ড বোধের ভেতর দ্রুত কড়া নাড়ে, নাড়ায় আমাদের, এবং সুখের কথা, এর মাঝেও সত্যিকার মানবতাবাদী আত্নারা তাদের কাজ চালিয়ে যাবেন একাগ্রচিত্তে।
                মানবতাবাদী যদি আমরা হই তো শ্রেণী-ধর্ম-জাতি-লিঙ্গ নির্বিশেষে হবো। শুধুমাত্র হঠাৎ হঠাৎ যদি আমাদের এই ভাব উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে, তাহলে ধরে নেয়া আবশ্যক যে ভেতরে খানিকটা কি যেনো গড়বড় আছে। ধর্ম নিয়ে ব্যবসা প্রাচীন এক পদ্ধতি মানুষের মগজ ধোলাই করবার জন্য। আর মানবতা নিয়ে ব্যবসা বোধ করি নব্য এক ব্যবসা যার আড়ালে মানুষ সস্তা জনপ্রিয়তা কুড়োতে চায়, নিজেকে জাহির করতে চায়। আমরা কি সব সময়েই এমনি করে সস্তা প্রচার পাবার জন্য ছোঁক ছোঁক করতে থাকবো? আমাদের প্রকৃত বিবেক কি কোনোদিনও জাগ্রত হবেনা। গ্রীষ্মকালীন ছুটি বা সবজির মতো, বা ঋতুকালীন ব্যবসায়ীদের মতো আমরাও কি বিশেষ সময়কালীন মানবতাবাদী হবো, নাকি আমাদের সত্তাকে গড়ে তুলবো প্রকৃত সচেতন মানুষের মতো করে? আম জনতাগণ রাজনীতিবিদদের মতো এই সুযোগ সন্ধানী মনোভাব পরিত্যাগ না করতে পারলে এই নষ্টস্রোত কোথায় আমাদের নিয়ে যাবে সেটি ভাবলে গা শিউরে ওঠে
সুস্হ ও গভীর মূল্যবোধ ছাড়া অসভ্যতার চোরাবালিতে ডুবে যাওয়ার প্রগাঢ় সম্ভাবনা থাকে। ব্যক্তি নয়, জাতিগত ভাবে এর থেকে উত্তরণের যথার্থ সিঁড়ি আমাদের খুঁজে নিতেই হবে। মানবতাবাদীতা নিয়ে ফেরিওয়ালার মতো চিৎকার বন্ধ করার জন্য এগিয়ে আসা সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব আমাদের সবার।

Three Catalysts and Humanity Rebourned

 

Three Catalysts and Humanity Rebourned
Naznin Seamon


“But all the time

I’se been a-climbin’on,

And reachin’ landin’s,

And turnin’ corners,

And sometimes goin’ in the dark

Where there ain’t been no light.

So boy, don’t you turn back.

Don’t you set down on the steps

’Cause you finds it’s kinder hard.”

                                                        ______“Mother to Son”; Langston Hughes



No, neither Malcolm X, nor Martin Luther King, had given up their dreams. They had encountered numerous obstacles, yet they held their aspirations alive for the freedom and equal rights of the Black people in America. Obviously, there are many differences between them about how they wanted to pursue their goals that mainly enable one to see their distinguished, unique personalities. Despite their polarized points of view, it is important to reconsider and credit the above two icons based on their ethical beliefs that is to attain the absolute right for the African Americans to lead life as human beings rather animals with sense of freedom, dignity and pride.

            Many great souls have had sacrificed their lives to save their nations being oppressed by others. However, few had guided their nations towrads freedom by inflaming the underlying current of anger that had concentrated deep down for a long time, but fear, lack of united effort, and most of all, need of a pioneer who can initiate the backfire, nail the coffin once and forever had held them back. One such leader is Bangabondhu Sheikh Mujibur Rahman who in his own strange way of absolute humanity, humbleness, consideration and undoubted boldness had leaded his nation to respond back to its’ oppressors not with violence, rather by reciprocating attitude. His maneuver touched the entire nation offering sparks in their thoughts that guided them to impel independence.

            Though it is a known fact that people with power have exploited other groups of human beings throughout the world, the inhuman brutality against the African Americans is one of the prime examples that points to one’s consciousness about how the white power had abused, tortured Black people not only physically, but mentally, economically and socially for centuries. It also had taken countless black souls to rise against this white aggression, to protest and demand their rights. Among them, Malcolm X and Martin Luther King Jr. are two pivotal roles who had contributed to shake white people’s kingdom in the Civil Rights era.  

            Exactly the same way Pakistan had exploited the Bengali nation; in cases even more drastically. They exhibited their aggression on the nations’ language, religion, unique characteristics, economy, social norms and values. Their goal was to paralyze the population by fearful, violent behavior and deprivation of rights. Many great leaders had protested this type of subjection of the nation and encountered tremendous brutality and tormentation of the Pakistani Govt. However, among those leaders Bangobondhu had stood up with his unique quality of love and devotion, fearless resistance power, instance decision making ability. Thus, aided by the support and co-operation of other leaders and the nation in general, he was able to crack the rigid wall of Pakistani ruling system.

            Despite their contributions, unfortunately, one of them is well regarded, and most importantly, well known throughout the world, while the other is not been credited as his work demands. Because of the fact that Malcolm X had exhibited aggressive mood and tone against the injustice done to the African Americans, many had portrayed him as an anti force than a key figure of the Civil Rights Movement. At the same time, some had justified his advocacy for violence pointing out his childhood.

            Bangobondhu used a firm tone throughout his political carrier though he did not want to choose turbulence. Therefore, he waited to the last minute to announce war against Pakistan until the rights of Bengali nation was pushed to the corner. Despite of winning the majority in the Parliament, raising various vile causes they exhibit reluctance to let him be the Prime Minister of the then East Pakistan, thus the rise of a deprived nation. British had exploited Bengal, India in a great sense, but in only 25 years of oppression, Pakistan had employed even the last bit of brutality, barbarism against Bengali people.

            Both Malcolm X and Dr. King criticized the white dominated government for their careless effort to minimize or resolve the issues that had generated the Civil Rights Movements. They blamed the government for not keeping promise given to the African Americans. Malcolm X criticized African Americans for sending the white Presidents saying: “It was the black man’s vote that put the present administration in Washington, D.C. Your vote, your dumb vote, your ignorant vote, your wasted vote put in an administration in Washington, D.C., that has seen fit to pass every kind of legislation imaginable, saving you until last, then filibustering on top of that” (27). On the contrary, in an effort to prove the contradictory images provided by the Constitution as well as so called Liberal Presidents, Dr King asked: “So the question is not whether we will be extremists, but what kind of extremist we will be. … … Will we be extremists for the preservation of injustice or for the extension of justice?” (77).



            Being aware of Pakistan’s wretchedness, Bangobondhu, on March 7th had decided to address the nation where he stood before anxious eyes and uttered the most significant words of behind the birth of a nation. According to Faruque Chowdhury, former High Commissioner of Bangladesh, if Bangobondhu had directly declared the Independence in Racecourse, it might have considered as a segregated effort like Biafra of Nigeria which might offer hindrance getting international support. However, it was a pretty straight forward declaration of Independence maintaining diplomacy not to be too direct, yet not indirect either.  Freedom loving Bengali people knew the meaning of his address where he strongly announced the Independence of Bangladesh. He also had told the nation to get ready with whatever they had to start the fight. In his 18 minutes long speech, he mapped out the nation’s future act to earn its’ freedom. He also suggested carrying on the fight until they are free if he was unable to direct them further due to Pakistani conspiracy though on March 23rd, from his residence where people from all over the country gathered, he once again affirmed the nation that there was no walking back until or unless freedom has been earned. Before getting arrested two nights later, he finally spoke to the nation mentioning his message possibly the last contact with the nation and there again, he ordered the nation to do everything to become independent.

            Malcolm X suggested an active, expeditious action to his audience. In contrast, Martin Luther King slowly infused his thoughts to the people so they would have a better grasp to think, rethink and justify. Both of them, however, agreed that there is no time to waste any more. They both demonstrated flashback to the slavery pointing out how their previous generations had toiled themselves. Malcolm X presented a transparent and vivid picture addressing his audience. He stated: “Three hundred and ten years we worked in this country without a dime in return – I mean without a dime in return. … It got rich because you made it rich” (“The Ballot or the Bullet”, 32); while King says: “Three hundred years of humiliation, abuse and deprivation cannot be expected to find in a whisper” (2). They both had portrayed the same picture of exploitation of the blacks by the whites, just in slightly different tones.

            Bangobondhu, in his political carrier had pointed out the inequalities offered by

the Pakistani Government which made them unsettled and uneasy. Therefore, Pakistani

Government’s eyes were always on him. He was arrested over and over and spent quite a

significant amount of time in jail but without fear, or compromise. There was no

concession in his world when it came to Bangladesh and its’ people. The greed of power,

threat of life, in fact, nothing impacted him from saying ‘Joy Bangla’. Bangobondhu had

sacrificed his entire life fighting for the freedom of Bangladesh and its’ people.

Though he remained imprisoned the entire period Bangali people have fought and

faced tremendous obstacles and unexplainable brutality of Pakistani soldiers and their

Bangladeshi collaborators, they kept moving holding the spirit of ‘Joy Bangla’ and the

dream of a free land sketched by Bangobondhu. In fact, ‘Joy Bangla’ became the

 motivating slogan of the freedom fighters.



            .

            After being the President of an independent country he on one hand, reached 

every corner of the world to attain acceptance as a newborn nation from different

countries, while on the other hand, closely focused to develop the war-broken country.

Unfortunately, he had to start from the scratch. On December 16th, knowing that they had

lost the war, Pakistani army even destroyed all the money in the bank. Yet, aided by great

devoted leaders and dedicated people he managed to walk towards the progression on the

country.





In 1845, Lucius C. Matlock in a review of Frederick Douglass’s Narrative of the

Life had asserted that “From the soil of slavery itself have sprung forth some of the most

brilliant productions, whose logical levers will ultimately upheave and overthrow the

system” (African American Literature, preface, 27). Long after slavery had been

abolished, such brutality and dehumanization of human beings continued. Fortunately,

from the germ of slavery emerged many talents and leaders to overcome these obstacles.

Slavery, though abolished, continued to begat more and more brilliant and devoted souls

to bring social, political, economical justice to the black people. As a whole, these people



sacrificed their time and lives to bring back humanity to the people who were deprived of

many human rights. Without any hesitation, it can be asserted that, Malcolm X and

Martin Luther King Jr. are two of those great souls in history who suffered from many

hindrances to prove the first Amendment to be true: “All men are created equal”.

Regardless of their different strategies, they are the two true icons of humanity as well as

the catalysts of the Civil Rights Movement.



            The same way, there were many leaders who contributed to the Freedom Fight of

 Bangladesh. 30 million had sacrificed their lives; more than 2 million were physically

abused. People from top to bottom except for the collaborators had contributed to earn

the Independence. Bangobondhu was the driver behind the wheel of this journey. He was

the force, the motivation, energy, dream maker of the nation. He is not only the catalyst

of ’71, he is the father of the nation because of his contribution to the country. He never

surrendered to the Pakistani even when they dug his grave next to his cell. He never gave

up his dream of free Bengali nation. He never compromised with the hope Bengali people

 had seen in him. He was the savior whose only dream was to build a independent, proud,

educated nation. His goal was to give the nation he rights they had been deprived of since

the separation. Thus, Bangladesh and Bangobondhu are equivalent.



                                                     

প্রলম্বিত পথে মনুষ্য যাত্রা



                                                                প্রলম্বিত পথে মনুষ্য যাত্রা

                          নাজনীন সীমন



                ১৯৭১ থেকে ২০১২সাল গণনার সহজ হিসেব কিন্তু একটি জাতির জন্ম, বিকাশ, তার মধ্যে বেড়ে ওঠা ঘুণপোকা এবং  সর্বোপরি, কালসাপ যা কিনা বিষাক্ত ছোবল মেরেছে বারবার, নীলবিষে ভরে তুলতে চেয়েছে সদ্য স্বাধীন হওয়া দেশের প্রতি বর্গইঞ্চি, স্নায়ুতন্ত্রগুলো অবশ করে দিতে উদ্যত হয়েছে, তার ভয়াল ফণার নীচে রাখতে চেয়েছে ৫৬,০০০ বর্গমাইলের ভূ-খণ্ডকে এবং কিভাবে একটি বিশেষ শ্রেণীর লোকদের বিশেষ তত্ত্বাবধান, আপ্যায়ন, কন্যাজামাইয়ের আদরে এই কালসাপ তার হিসহিস শব্দে ভরে তুলেছে বাংলার আকাশ বাতাস, শিকার বানিয়ে দেশের কোমর পেঁচিয়ে ধরে গিলে ফেলার পাঁয়তারা করেছে সে হিসাব সহজ তো নয়ই বরং বেশ কঠিন- অবশ্য এক অর্থে সহজ কারণে যে যার/যাদের দেশপ্রেম নেই, নেই মাতৃভূমির প্রতি আনুগত্য, তার/তাদের পক্ষে তো এমনটাই স্বাভাবিক এবং তারই প্রতিচ্ছবি দেখি আমরা দেশের এক শ্রেণীর মানুষের মধ্যে দ্বিতীয়টিও  প্রযোজ্য এজন্য যে যখন দেশের প্রতি ভালবাসার প্রকাশ করতে এসব মানুষেরা হাঁফানীর রোগীর মতো হাঁফাতে থাকেন, রঙিন ব্যানারে, পত্রিকার পাতায়, মাঠে ময়দানে ফলাও করে দেশদরদীর মার্কা সাঁটতে চান নিজেদের গায়ে অথচ ঐসব সর্পরূপীদের স্বজ্ঞানে স্বেচ্ছায় স্বর্ণমুকুট পরিয়ে নিশ্ছিদ্র প্রহরায় রাখতে সচেষ্ট হন, রাষ্ট্রের পতাকা তাদের গাড়িতে তুলে দিয়ে চরমতম সম্মান দেন, মহান সংসদে তাদের অপবিত্র, কলুষিত, বিষবাষ্প ছড়ানোর সুযোগ করে দেন, ধোঁকা দেন সাধারণ মানুষকে, তাদের সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্তে আসা, তাদের স্বরূপ উন্মোচন করা কঠিন বৈ কি!



                মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছে সন্দেহাতীত ভাবেই স্বাধীনতার আগে থেকে ঘাতক রাজাকারেরা কখনোই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ চায়নি, আদতে পাকিস্তানের মতো পরাক্রমশালী সামরিক জান্তা যার সমর্থকেরও অভাব নেই, তার হাত থেকে মুক্তি সম্ভব এটা এরা চিন্তাও করতে পারেনি তাই যতোটুকু হিংস্রতা দেখানো সম্ভব, অমানবিকতার সীমা যতোখানি অতিক্রম করলে আর মানুষের ছায়াও থাকে না, তারও ঢের বেশী ভয়ানক হয়ে রাজাকার আল বদর আল শামস বাহিনী পৈশাচিকতার তাণ্ডবে মেতে উঠেছিলো, প্রকম্পিত করেছিলো স্বাধীনতা কামী মানুষের দিন রাত্রি মানবেতিহাসের জঘন্যতম নৃশংসতার প্রত্যক্ষ উদাহরণ সৃষ্টি করেছিলো এইসব নর ঘাতকেরা; শুধু মানুষ হত্যা করেই নয়, বরঞ্চ বর্বরতার যতো ধরন ছিলো এবং তার সাথে নতুন উপায় সংযোজন করে টি মাস ধরে এরা গলা টিপে হত্যা করতে চেয়েছে বাঙালীর স্বাধীন হবার স্বপ্ন, চোরাবালিতে ডোবাতে চেয়েছে সংগ্রামী শক্তি



                যেহেতু তাদের স্বপ্ন সাধের পাকিস্তানী পতাকা আর তার উর্দু ভাষারই বরং বাংলা থেকে বিতাড়িত হওয়া নিশ্চিত হয়ে যায় ডিসেম্বরের দিকে, শেষ অস্ত্র হিসেবে তারা বেছে নেয় ডিসেম্বরের ১৪ তারিখ; ধরে ধরে বাড়ী বাড়ী গিয়ে যেসব মানুষগুলো দেশকে সফলভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতেন, সেইসব মেধাশিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, চিকিৎসক, প্রকৌশলীদের নির্মমভাবে হত্যা করে এটি স্বাধীনতার পূর্বলগ্নের শেষ রাজনীতি যার আরো একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ছিলো পরাজয়ের আগে ব্যাংকের টাকা পর্যন্ত পুড়িয়ে দেয়া যাতে করে স্বাধীন হলেও মেধাগত বা অর্থগত কোনোভাবেই দাঁড়াতে না পারে জাতি যার ফলশ্রুতিতে অদূর ভবিষ্যতে আবারো পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত হতে হয় বাংলাদেশকে, কিন্তু আরো মানবেতর ভাবে, আরো বেশী অধিকারক্ষুণ্ন হয়ে



                ৭১এর ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত এই রাজনীতি এক রকম এবং একমুখী অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রত্যক্ষ বিরোধিতা হলেও বিজয় অর্জিত হবার পর থেকে তা বিভিন্ন দিকে মোড় নেয় একশ্রেণী যখন তাদের পূর্ববর্তী চিন্তায় অটল থেকেছে, অন্য শ্রেণী তখন আবির্ভূত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশে আস্হার ভান দেখিয়ে যতো ধরনের সুযোগ সুবিধা সম্ভব, হাসিল এবং অন্তরালে দেশবিরোধী কাজের মাধ্যমে শত্রুমহলকে সাহায্য করতে আবার অন্য এক শ্রেণীর মানুষ স্বাধীনতা এবং ধর্মকে গুলিয়ে তথা পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটিকে পাক পবিত্র এবং ইসলামের সমার্থক মনে করে এই রাষ্ট্রের প্রতি নতজানু হয়ে থাকে আর এক ধরনের লোক আছে যারা বাংলাদেশের সংবিধানের চার স্তম্ভের একটিকে জুজুর মতো ভয় পায়ধর্ম নিরপেক্ষতা শুনলেই মনে করে ধর্ম বিসর্জন দেয়ানোর জন্য রাষ্ট্রকর্তৃক ষড়যন্ত্রের অংশ এটি শেষোক্ত দুই শ্রেণী কাজটি করে থাকে মূলত অজ্ঞতাবশতঃ যার ষোলআনা দায়ভার পড়ে বিশেষ কিছু রাজনৈতিক দলের উপর যারা অপপ্রচারের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে ধোঁকা দেয়ার জন্য এসব মনগড়া তত্ত্ব প্রচার করতে করতে একে একরকম সত্যে পরিণত করেছে ঐসব দুর্বলচিত্ত যুক্তিজ্ঞানহীন মানুষগুলোর কাছে তবে সবচেবেশী রাজনীতিকরণ বোধকরি ঘটেছে ভারতকে ঘিরে; যেহেতু এটি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, ’৭১- আমাদের প্রত্যক্ষ সমর্থন যুগিয়েছে, সর্বপ্রথম স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি দিয়েছে, সর্বোপরি যেহেতু পরাজয়ের গ্লানি আজো না ভুলতে পেরেছে পাকিস্তান, না এদেশীয় বর্বরেরা, তাই ভারতকে তারা দেখে শত্রু হিসেবেই যার সূত্রপাত অবশ্য আরো আগে থেকেইবিশাল এক উপমহাদেশ থাকার সময় থেকে



                উপরোল্লিখিত দ্বিতীয় ধারার রাজনীতিকরণের সুস্পষ্ট প্রকাশ ঘটে৭৫ পরবর্তী সময়ে যার প্রথম বহিঃপ্রকাশ একই সালের ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যার মধ্য দিয়ে এর পর থেকেই পরিলক্ষিত হয় রাজাকারদের চরম উৎকর্ষ; দেশে বিদেশে বিশেষ সম্মানসহ পদোন্নতি দিয়ে রাজাকারদের পুনর্বাসন করা হয়, গর্তে লুকিয়ে থাকা ধেড়ে ইঁদুরগুলো লেজ নাচাতে নাচাতে বেরিয়ে আসে পরম নির্ভরতার আভাসে, নতুন কাটা খালে ধেই ধেই বেড়ে ওঠে কুমিরগুলো আদতে এই প্রক্রিয়া অদ্যাবধি থামেনি, বরঞ্চ সময়ে আরো প্রবল হয়েছে একটা সময়ে রাজাকারদের সাথে চুক্তি হতো রাতের আঁধারে, প্রকাশ্যে ঐসব তথাকথিত রাজনৈতিক নেতারা তাদের বিরোধিতা তো বটেই বিষেদাগারও করতেন কম বেশী, অথবা থাকতেন নিশ্চুপ; কিন্তু এখন আর রাখঢাকের কিছু নেই এইসব মানবতাবিরোধীদের মুক্তির দাবীতে লাখো মানুষের জনতায় সগর্বে দাবী জানানো হয়, জাতিকে অবগত করা হয় এদের গুণকীর্তন অর্থাৎ কিনা এদের কাউকে বানানো হয় অধ্যাপক, ভাষা আন্দোলনের পুরোধা, মজলুম নেতা, দেশদরদী, আধ্যাত্নবাদের শিরোমণি সহ আরো বহু কিছু



                আর সুচিন্তিত রাজনৈতিক নীল নক্সার এই ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অন্যতম ফসল মানবতাবিরোধী ঐসব নেতাদের দল এখন ঘরে তুলতে শুরু করেছে যখন থেকেই তারা খালে নির্বিঘ্ন বসবাস শুরু করেছে, ঠিক তখন থেকেই তাদের সুদূর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ধর্ম ব্যবসার অংশ হিসেবে হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে সন্তানদের নানা সুবিধা দিয়ে ক্রমশঃ মগজ ধোলাই করে নিজেদের কব্জির জোর বৃদ্ধি করেছে, গড়ে তুলেছে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী, রগ কাটা বাহিনী যাদের মুখ্যমন্ত্র, “বাঁচলে শহীদ, মরলে গাজী”, যারা নিয়তই ধর্মখোয়াগেল সিনড্রোমে ভোগে, মানুষের কোনো মূল্যই নেই তাদের কাছে, শুধু বিশেষ একটি ঐশ্বরিক গ্রন্হ তার প্রবক্তা অনুসারীরাই এদের কাছে গ্রহণীয় একাধিকবার ক্ষমতাসীন বিশেষ এক রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছা, সাগ্রহ, সক্রিয় সহযোগিতায় দেশের সর্বস্তরে এদের প্রতিনিধি রয়েছে বর্ণচোরা হয়ে; প্রয়োজনানুযায়ী এরা ঠিকই চোরাগুপ্তা কাজ করে চলেছে যাতে সামগ্রিকভাবে দেশ অকার্যকর হয়ে পড়ে এর উদাহরণ আমরা বারংবার দেখেছি, দেখছিও



                অ্যামিবার মতোই এদের যেনো ধ্বংস নেই, কাটা অংশ থেকে আবার জন্ম নেয় নতুন অ্যামিবা অপকারী পরগাছার  বাড় সব সময়ই বেশী; রাজাকারেরাও আমাদের স্বাধীন দেশে পরগাছা মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগ তিতিক্ষাকে পুঁজি করে, ধর্মবিশ্বাসী মানুষদের অবলম্বন করে এরা বেড়ে উঠেছে, আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলছে আমাদের চারপাশ ক্রমান্বয়ে বর্ণচোরা এইসব ভণ্ডদের কলা কৌশল ক্ষমতা অপরিমেয় যখন তখন সারমেয়োর মতো ধারালো দাঁত বসিয়ে দিতে পারে জাতির ঘাড়ে, আঁচড়ে ক্ষত বিক্ষত করে তুলতে পারে দেশ মাতৃকাকে য়ে কাজটি৭১- সম্পাদন করতে পারেনি, তা শেষ করার জন্য নানা রঙে নানা ঢঙে সর্বদিক দিয়ে প্রস্তুত এরা



                মানবতাবিরোধী অপশক্তিদের বিচার কার্য শুরু হয়েছে, নানা অনিশ্চয়তা, বাধা বিঘ্নের মধ্য দিয়ে কখনো শ্লথ, কখনো স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে চলেছে খোদ যুদ্ধাপরাধী তাদের তৈরী দল থেকেও এখন জোর গলায় এই বিচারের প্রতিবাদ করছেন বর্তমান প্রধান বিরোধী দল কারণটা সবার কাছেই পরিষ্কার হওয়ার সময় এটা অথচ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ এখনও ধোঁয়াশাচ্ছ্ন ব্যাপারে যেহেতু যারা দেশবিরোধী হিসেবে ইতোমধ্যে পরিচিত, তাদের চেনা এবং বর্জন করা কঠিন কিছু নয় যদি ন্যূনতম মানবতা এবং বিবেকবোধ কারো থেকে থাকে; কিন্তু মুখোশের আড়ালে থাকা ঐসব অর্থলোভী, স্বার্থপর, হীনমন্য, নির্লজ্জ. সত্য বিবর্জিত, সুযোগ সন্ধানী অপশক্তিকে চেনা এবং তাদের পরিহার করাটা এতোটা সোজা নয়



                গোটা জাতি যখন আজ সোচ্চার হয়েছে এক দাবীতে, একত্রিত হয়েছে এক ছাতার নীচে, তখন বিচার হয়তো হবেই কুখ্যাত দাগী কিছু রাজাকারের, কিন্তু এদের নানাভাবে সহায়তা সমর্থনদানকারীদেরও কি বিচারের আওতায় আনা উচিৎ না? যেসব আইনজীবী তাদের সমর্থন দিচ্ছে (সম্মানসূচক ভাষা ইচ্ছেপূর্বক বর্জিত), রাজনৈতিক দল তাদের হয়ে কাজ করেছে করছে, তাদেরকেও যদি আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় না করানো হয়, তবে বিষবৃক্ষের শিকড় রয়েই যাবে এবং সুযোগমতো ডালপালা বিস্তৃত করে কালো ছায়ায় ঢেকে দেবে বাংলার ঘাস-মাটি-নদী



                দেশদ্রোহিতা কোনো দেশে কস্মিন কালেও প্রশ্রয় দেয়া হয়না, বরং এর ভয়াবহ শাস্তির জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ চোখের কোণ ঘুরিয়ে নজর করলেই আমরা দেখতে পারি অথচ আমাদের এই দেশে দেশদ্রোহী শক্তিই বরং জোর গলায় কথা বলে, বিকৃত ইতিহাস নিয়ে বুক চিতিয়ে হাঁটে, নতুন প্রজন্মদের বিপথগামী করে খোলা বানে ভাসিয়ে নিয়ে যায় মিথ্যের কাণ্ডারী হয়ে ভাইরাস যেমন খালি চোখে দেখা যায়না, এই মুখোশধারী শক্তির কর্মপ্রণালীও তেমনি অদৃশ্য আবার ভাইরাসের যেমন জীবন্ত শরীরের কোষ প্রয়োজন হয় সংখ্যাবৃদ্ধির জন্য, পুরোনো ঘাতকরাও ঠিক তেমনি বেড়ে উঠতে আশ্রয় করেছে বিপথগামী কিছু রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে গঠিত এক দলকে অসংখ্য মিল থাকা সত্ত্বেও ভইরাস রাজাকারদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অমিল হোল অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রথমটি থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য প্রতিরোধ ব্যবস্হা তথা সচেতনতার উপর নির্ভর করতে হয় যেহেতু সব ভাইরাসের বিপরীতে প্রতিষেধক এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি এখন পর্যন্ত; কিন্তু যুদ্ধাপরাধী তাদের দোসরদের বেলায় উভয় ব্যবস্হাই গ্রহণ করা সম্ভবযথাযুক্ত শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে এদের শাস্তির ব্যবস্হার মাধ্যমে বাংলার মাটি থেকে এদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়া এবং ছদ্মবেশীদের মিষ্টি কথায় কান না দিয়ে সত্য মিথ্যা বিচার করে, সঠিক ইতিহাস জেনে যুক্তির সাথে বিবেচনাপূর্বক এসব হঠকারীদের পরিত্যাগ এবং তাদেরও বিচার ব্যবস্হা নিশ্চিত করে যাতে এদের ডিম্বক বীর্যে আর কোনো ভ্রুণ গঠিত হতে না পারে,  অবশ্যই রাজাকারমুক্ত সত্যিকার স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নকে আমরা বাস্তবে পরিণত করতে পারি



                একজন সুনাগরিক হিসেবে, সচেতন, বুদ্ধিদীপ্ত, মানবিক বোধসম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই কর্তব্য যুদ্ধাপরাধী তাদের সমর্থন দাতাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো, তাদের না বলা আমরা কি পালন করছি আমাদের দায়িত্ব? ১৯৭১ থেকে ২০১২সুদীর্ঘ সময়, আর কতো মাস, বছর পার হলে আমরা পূর্বপুরুষের রক্তের ঋণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবো? কবে মানুষের মতো মানুষ হবো আমরা?

    এবার আমাদের বলতেই হবে:

    “ঘাতক তুমি সরে দাঁড়াও, এবার আমি

                 লাশ নেবো না।

    নইতো আমি মুদ্দোফরাস। জীবন থেকে

                 সোনার মেডেল,

    শিউলি-ফোটা সকাল নেবো।

    ঘাতক তুমি বাদ সেধো না, এবার আমি

                 গোলাপ নেবো।” (শামসুর রাহমান)